বাঙালির প্রিয় সন্দেশের গায়ে এবার জিআই-র সিলমোহর

বাংলার মিষ্টিমুখের ঐতিহ্য পেল বিশ্ব মঞ্চে স্থান, নলেন গুড়ের সন্দেশে যুক্ত হল জিআই-এর সম্মান।

শীত পড়লেই শহরের প্রতিটি মিষ্টির দোকানে বাড়ে একটাই চাহিদা—নলেন গুড়ের সন্দেশ। এবার সেই মিষ্টির খ্যাতি ছড়াল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে। সম্প্রতি ভৌগোলিক স্বীকৃতি (ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই)) ট্যাগ পেল কলকাতার নলেন গুড়ের সন্দেশ।

খেজুর গাছ থেকে সংগৃহীত রস দিয়ে তৈরি হয় এই বিশেষ ধরনের গুড়, যা শীতকালে সীমিত সময়ের জন্যই সংগ্রহ করা যায়। এই নলেন গুড়ই বাঙালির প্রিয় সন্দেশের অন্যতম উপাদান।

ইতিহাস বলছে, বর্ধমানের আশপাশে ‘সিউলি’ সম্প্রদায়ের মানুষ শতাব্দী ধরে এই গুড় উত্তোলনে দক্ষ। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে শুরু হয় এই গুড়ের বাণিজ্যিক উৎপাদন। এরপর থেকেই এর ক্যারামেল স্বাদ বাঙালির মিষ্টির তালিকায় বিশেষ জায়গা করে নেয়।

কলকাতার দ্বারিক, কেসি দাস, ভীম চন্দ্র নাগের মতো প্রথিতযশা মিষ্টির দোকানগুলিই প্রথম নলেন গুড়কে সন্দেশ তৈরিতে ব্যবহার করে জনপ্রিয় করে তোলে। শীত এলেই শহরের প্রতিটি দোকানে দেখা মেলে এই সোনালি, সুগন্ধি মিষ্টির।

ছানা ও নলেন গুড় মিশিয়ে তৈরি হয় এই মিষ্টি। এর রঙ, গন্ধ এবং স্বাদ—সবই অতুলনীয়। শুধুমাত্র বাঙালির প্রিয় তালিকায় নয়, বর্তমানে ফিউশন ডেজার্টেও নলেন গুড়ের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। চিজকেক, আইসক্রিম, তিরমিসু থেকে শুরু করে মুস—নতুন প্রজন্মের রসনার অন্বেষণেও মিলছে এই স্বাদের ছোঁয়া।

ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) ট্যাগ অর্জনের ফলে শুধু বাংলার গর্বই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও বাঙালির শীতকালীন মিষ্টির ঐতিহ্য ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা শিল্পমহলের।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here