বুধবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে হুগলি নদীর নিচে ৫২০ মিটার সুড়ঙ্গ থেকে একটি মেট্রো ট্রেন যাত্রা করে ভারতের প্রথম নদীর তলদেশে ভ্রমণ করে।
ভারতের প্রথম মেট্রো কলকাতায় যাত্রা শুরু করার প্রায় ৪০ বছর পরে এই কৃতিত্ব এসেছে। দিল্লির প্রথম মেট্রো লাইন পাওয়ার ১৮ বছর আগেও কলকাতার মানুষ মেট্রোতে যাত্রা শুরু করেছিলেন, যা ভারতীয় রেলের বোরি বুন্দর এবং থানের মধ্যে প্রথম ট্রেন পরিষেবা চালানোর ১৭০ বছর পরে ছিল।
মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার পি উদয় কুমার রেড্ডি এই অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক বলে বর্ণনা করে বলেন, “হাওড়া ময়দান এবং এসপ্ল্যানেড স্টেশনের মধ্যে আগামী পাঁচ থেকে সাত মাস পরীক্ষামূলক ভাবে চলবে।
কেএমআরসিএল-এর সমস্ত কর্মী এবং প্রকৌশলী, যাদের প্রচেষ্টা এবং তত্ত্বাবধানের ফলে এই ইঞ্জিনিয়ারিং মাস্টারপিসটি তৈরি হয়েছিল, তারা সকলেই আনন্দিত যে তাদের স্বপ্ন সত্যি হয়েছে।
হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ অংশে পরীক্ষামূলক চলাচল শীঘ্রই শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং ২০২৩ সালে এই লাইনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একবার এই প্রসারটি চালু হয়ে গেলে হাওড়া হবে দেশের গভীরতম মেট্রো স্টেশন (পৃষ্ঠের ৩৩ মিটার নীচে)।
সব কিছু ঠিক ভাবে চললে চলতি বছরেই গঙ্গার তলা দিয়ে ছুটবে মেট্রো। কলকাতা মেট্রোর তরফে বুধবার এমনই জানানো হয়েছে। বুধবারই এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন থেকে নবনির্মিত হাওড়া ময়দান স্টেশনে এসে পৌঁছয় মেট্রোর দু’টি রেক। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, এখনই নতুন পথে পরীক্ষামূলক ভাবে ছুটবে না মেট্রো। বরং নানা ভাবে পরীক্ষানিরীক্ষার পরই বাণিজ্যিক ভাবে যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে হাওড়া ময়দানগামী মেট্রোর দরজা। প্রাথমিক পর্যায়ে হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড স্টেশন অবধি মেট্রো চালানো হবে।
এই পথে মেট্রো চলাচল শুরু হলে শহরের বাসিন্দারা তো বটেই, শহরতলি থেকে আসা নিত্যযাত্রীদেরও যাতায়াতে সুরাহা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ কথার প্রতিধ্বনি পাওয়া গিয়েছে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রের বক্তব্যেও। তিনি বলেন, “কলকাতা মেট্রোর জন্য এ এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। বহু বাধা অতিক্রম করে আমরা মেট্রো রেককে হাওড়া অবধি নিয়ে যেতে পারলাম। কলকাতা এবং শহরতলির মানুষকে বিশেষ উপহার দিতে চলেছে ভারতীয় রেল।”